ভিডিও

পীরগঞ্জের

মাদারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে সংঘর্ষে  প্রধান শিক্ষক আহত হয়ে হাসপাতালে

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪, ০৮:১৬ রাত
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০২৪, ০৮:১৬ রাত
আমাদেরকে ফলো করুন

পীরগঞ্জ (রংপুর) প্রতিনিধি: রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার মাদারগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার প্রবেশপত্র বিতরণ নিয়ে সংঘর্ষে প্রধান শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহত প্রধান শিক্ষক শাহ তাজুল ইসলাম শামীমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় আহত প্রধান শিক্ষক থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন বলে জানান ওসি আনোয়ারুল ইসলাম।

২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে এলাকার ক্ষমতাশালীরা প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। ওই সময়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক একরামুল ইসলাম প্রধানকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব প্রদান করেন এবং প্রধান শিক্ষককে স্কুলে প্রবেশে একের পর এক বাধা দিতে থাকেন।

অবৈধভাবে সাময়িক বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক উচ্চ আদালতের শরণাপন্ন হন। ২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে হাইকোর্ট ডিভিশন সাময়িক বরখাস্ত অবৈধ ও বৈধ প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম শামীম সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এবং দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ড ও ইউএনওকে রায় বাস্তবায়নে নির্দেশ প্রদান করেন।

এ সময় আদালতের রায় পেয়ে তৎকালীন শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি স্বাক্ষরিত অপর চিঠিতে প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম শামীমকে দায়িত্ব পালনের লিখিত নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসানের কাছে আদালতের রায় ও ডিজির লিখিত নির্দেশনা উপস্থাপন করলে ইউএনও প্রতিষ্ঠানের বিল-বেতন বন্ধ রেখে দিনাজপুর শিক্ষাবোর্ডের মতামতে চিঠি প্রেরণ করেন।

বিগত বছরের জুন মাসে দিনাজপুর বোর্ড সকল কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও আদালতের নির্দেশনা গুরুত্ব দিয়ে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতে প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম শামীমকে লিখিত দায়িত্ব প্রদান করে। দায়িত্ব পালনে তাজুল ইসলাম শামীম প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে গেলেই বিছিন্ন এলাকাবাসী ও ক্ষমতাসীনরা ও প্রতিষ্ঠানের সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ ৩ শিক্ষকের লোকজন একাধিকবার বাধাগ্রস্ত করেন।

নিরুপায় হয়ে প্রধান শিক্ষক বিগত ৩০ জানুয়ারি নিম্ন আদালতে সাত ধারা মামলা রুজু করেন। প্রধান শিক্ষক তাজুল ইসলাম শামীমকে পীরগঞ্জ শেখ হাসিনা আদর্শ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আ স ম রফিকুল ইসলাম (কেন্দ্র সচিব) আসন্ন এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ১৪০টি প্রবেশ পত্র বিতরণ করতে বলেন।

আজ মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে প্রধান শিক্ষক অফিসে গিয়ে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র বিতরণকালে অপরপক্ষের হামলার শিকার হন। আহত প্রধান শিক্ষককে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক একরামুল ইসলাম প্রধান জানান, সকালে ওই প্রধান শিক্ষক প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক ভবনের গেটের তালা এবং অফিস কক্ষের তালা হাতুড়ি দিয়ে ভেঙে অফিসকক্ষে প্রবেশ করেন।

অফিস কক্ষে প্রবেশ করে দুটি আলমারি তালা এবং অফিসে রক্ষিত সিসি বন্ধ করে দিয়ে প্রধান শিক্ষকের টেবিল ভাঙচুর করেন। এ সময় আলমারিতে রাখা ৩৫ হাজার টাকা, ৪টি ল্যাপটপ, একটি ডিজিটাল ক্যামেরা খোয়া যায়।

তিনি আরও জানান, প্রধান শিক্ষক স্কুলে বসেছেন বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে একবারপুর গ্রামের আব্দুর রশিদ, জিল্লুর রহমান রুহুল আমিন, শাকিল প্রধান, মশিউর রহমান, অভিভাবক সদস্য রনি প্রধান, শাহীন প্রধান, আব্দুল মতিন আকন্দ, এছাড়াও হাসান পুর গ্রামের প্রায় দুশ’ লোকজন প্রধান শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দিতে স্কুলে  আসেন।

এ সময় স্থানীয়রা বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে বেশ কিছু পুলিশ সদস্য প্রতিষ্ঠানে গিয়ে জনগণকে শান্ত করেন। ভয়ে  স্কুলের শিক্ষার্থীরা কেউ প্রতিষ্ঠানে আসেনি। মাদারগঞ্জ বন্দরের একাধিক সুধী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, দীর্ঘদিন যাবত ঐতিহ্যবাহী একটি প্রতিষ্ঠানে প্রধান শিক্ষক নিয়ে উভয়পক্ষের টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকবাল হাসান জানান, বৈধ প্রধান শিক্ষক আহত তাজুল ইসলামকে ঘটনার প্রতিবেদন দাখিলে নির্দেশ প্রদান করেছি।



মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, দৈনিক করতোয়া এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়
H009
KCS